Home আইন-অপরাধ কুমিল্লা মুরাদনগর প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে আবাদে চলছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন।

কুমিল্লা মুরাদনগর প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে আবাদে চলছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন।

0

কুমিল্লা মুরাদনগর প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে আবাদে চলছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন।

স্টাফ রিপোর্টার

কুমিল্লা মুরাদনগরে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে কৃষি জমির মাটি লুটে নিচ্ছে সাবেক যুগ্ম সচিব মো নাজির হোসেন ও তার সহযোগী মো বাবুল মিয়া নামের এক ভূমিদস্যু। প্রশাসন বাধা দেওয়ায় দিনে ও রাতের আধারে চালাচ্ছে অবৈধ ড্রেজারে ফসলী জমি খনন, পাচার করছে মাটি, ধ্বংস করছে ফসলের মাঠ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার ১৬ নং ধামঘর ইউনিয়নের নোয়াখলা গ্রামের পাশের গ্রাম উনঝুটি গ্রামের সাবেক যুগ্ম সচিব কাজি নাজির হোসেন স্থানীয় প্রভাবশালী এলাকায় একজন অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত। গত কয়েক বছরে অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে এলাকার কৃষি ও ফসলী জমির মাটি কেটে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে হয়ে উঠেছেন ভূমিদস্যু এবং হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা, আর বিলীন করে দিচ্ছেন ফসলের মাঠ। এর অংশ হিসাবে পশ্চিম বল্লভ পুর গ্রামের বাবুল মিয়াকে নিয়ে চলছে তার এই মাটি লুটের রমরমা ব্যবসা। গত তিন বছর আগে উপজেলার নোয়াখলা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পার্শ্বে নোয়াখলা গ্রামের মধ্য মাঠে প্রায় ৬০ শতাংশ ফসলী জমি নিয়ে তাদের এই অবৈধ মাটি খনন ও বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। অধিক মোনাফার লোভে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে সরকারী নিয়ম-নীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করে বিরামহীন ভাবে কাটছে ফসলের মাঠ। এই বিষয়ে গত ২৯/৮/২৪ ইং স্থানীয় সচেতন মহল থেকে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ এর মাধমে জানালে বর্তমান উপজেলা প্রশাসন প্রাথমিক কিছু ব্যবস্থা নেন এবং অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটতে মৌখিক ভাবে নিষেধ করেন। কিন্তু একদিন না যেতেই আবার শুরু হয় তাদের জমি খনন কাজ। পরে একাধিক বার স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো রোকসানা সহ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন কে অবগত করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী কৃষকরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ভূক্ত ভোগীরা বলেন, এই ভূমিদস্যু কাজী নাজির হোসেন, মোঃ বাবুল মিয়া ও তার সহযোগীরা অধিক মোনাফার লোভে বিভিন্ন মহলকে আর্থিক ম্যানেজ করে সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সচিব এর প্রভাব খাটিয়ে এলাকার কৃষি জমি খনন করে মাটি পাচার করে চলছে প্রতিনিয়ত। আমরা গরীব অসহায় এমনি ভাবে কৃষি জমি কেটে ফেললে আমরা ফসল ফলাবো কোথায়, খাবো কি? ওই ভূমিদস্যুরা এলাকায় কারো কথা শুনেনা। কেউ কিছু বললে তাদেরকে হুমকি ধমকি দিয়ে চুপ করিয়ে এই অবৈধ মাটি খনন করে ফসলের মাঠকে সাগরে পরিনত করেছে। অপরদিকে অবৈধভাবে এসব ড্রেজারের পাইপলাইন সংযোগের জন্য এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মানুষের বসতবাড়ি ব্যবহার করায় মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ড্রেজার সিন্ডিকেটের ভয়ে ভুক্তভোগীরা কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না।

ভূক্তভোগীরা আরও বলেন, শুরু থেকে উপজেলা প্রশাসনকেও বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় উপজেলা প্রশাসন কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিগত তিন বছরে উপজেলার নোয়াখলা মৌজায় বিএস দাগ নং (৪৭৬, ৪০৭, ৪০৮, ৪০৯, ৪১০, ৪১২, ৪১২, ৪১৩, ৪১৭, ৪১৫, ৪১৬, ৪১৬, ৪২০, ৪২১, ৪২২, ৪২৩, ৪২৪) মোট ১৭দাগে ২৪৬ শতাংশ ফসলী জমি ধ্বংস করেছে ওই ভূমিদস্যু চক্র। দিন দিন তাদের এই ফসলী জমি ধ্বংস করার কার্যক্রম বাড়ছে। আশপাশের বাকী ফসলি জমিও হুমকির মুখে পড়েছে এবং পরিবেশ তার ভারসম্য হারাচ্ছে।

ড্রেজার মেসিনের মাধ্যমে মাটি কাটা, কৃষি জমি খনন ও সরবরাহ করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ সরকার অথচ কোন অদৃশ্য ক্ষমতার বলে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে কৃষি জমি লুটছে এই ভূমিখেকো সাবেক যগ্ম সচিব কাজী নাজির হোসেন ও বাবুল মিয়া ? তার খুঁটির জোর কোথায় এমনটাই প্রশ্ন স্থানীয় সচেতন মহলের।

স্থানীয় ভূক্তভোগীরা জানায়, এই আলোচিত ড্রেজার ব্যবসায়ী ভূমিদস্যু সাবেক যুগ্ম সচিব কাজী নাজির হোসেন ও বাবুল মিয়া র বিরুদ্ধে মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন বরাবর একাধিক অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। ওই এলাকার কৃষি জমি বাঁচাতে কৃষকদের বাচাঁতে এবং পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় ভূক্তভোগী কৃষকগন।

গোপন সূত্রে জানা যায়, ভূমিদস্যু সাবেক যুগ্ম সচিব কাজী নাজির হোসেন ও বাবুল মিয়া গং বিভিন্ন মহলে প্রতি মাসে পনের হাজার টাকা এবং এক কতিথ সাংবাদিক মনির কে দশ হাজার টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ওই ড্রেজার চালাচ্ছে। বিভিন্ন মহল এসে টাকা নিয়ে চলে যায় তাই অবাদে লুটছে ফসলী জমি।
এ বিষয়ে এডিসি কবিরুল ইসলামের নির্ধেষনা থাকলেও ব্যবস্থা নেয় নি উপজেলা প্রসাশন।

এ বিষয়ে জানতে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া র মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সিফাত উদ্দিন এর সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করে বিরক্ত করবেন না যোগাযোগ ও করবেন না । তবে অবিযান চলমান।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version